MAJHBARI SI. A. S. H. ALIM MADRASAH
PANGSHA,RAJBARI. EIIN : 113403
সাম্প্রতিক খবর

 
মাদরাসার সংক্ষিপ্ত ইতিহাস
মাদরাসা শিক্ষার রয়েছে এক গৌরবময় ঐতিহ্য। বিগত দেড় হাজার বছরের ইতিহাসে মাদরাসা শিক্ষা এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। একথা সত্যি যে, মাদরাসা শিক্ষার শুরু বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) এর পবিত্র জামানা থেকে। এ শিক্ষা-ই একদিন অন্ধকার দুনিয়াকে আলোতে উদ্ভাসিত করেছিল । জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য-দর্শন তথা সর্বক্ষেত্রে অবদান রেখে বিশ্ব সভ্যতাকে সমৃদ্ধ করেছিল এ শিক্ষা। আল্লাহর তাওহীদ, রাসুল (সাঃ) এর রিসালাত ও আখিরাত ইত্যাদি ইসলামের বুনিয়াদী শিক্ষা সম্বলিত মাদরাসা শিক্ষা।
পবিত্র মক্কা শরীফের এক নির্জন পাহাড়ের পাদদেশে হযরত আরকাম (রাঃ) এর ছোট গৃহে অত্যন্ত সংগোপনে এই মাদরাসা শিক্ষার সূচনা করেন স্বয়ং মহানবী হযরত মুহম্মদ (সাঃ)। তিনিই ছিলেন এই মাদরাসার শিক্ষক, ইসলামের প্রথম যুগের সকল সাহাবী (রাঃ) ছিলেন এ মাদরাসার শিক্ষার্থী।
হুজুর আকরাম (সাঃ) এর এ শিক্ষা বজায় রাখার লক্ষ্যে সারা বিশ্বে মাদরাসা শিক্ষা চলতে থাকে। তারই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশেও হাজার বছরের লালিত আলিয়া নেছাবের মাদরাসা শিক্ষার ধারা সুপ্রাচীন। সাধারন শিক্ষার পাশাপাশি মাদরাসা শিক্ষা ব্যবস্থায় ধর্মীয় শিক্ষা ও জাগতিক শিক্ষা একটি অপরটির পরিপূরক রুপে সমান্তরাল ভাবে চলে এসেছে দীর্ঘ দিন ধরে। মাদরাসার বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা সরাসরি ভর্তি হচ্ছে ইঞ্জিনিয়ারিং ও মেডিকেল কলেজে এবং কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হচ্ছে সেসব পরীক্ষাতেও।
মাদরাসা শিক্ষাই একদিন সারাবিশ্বে গণিতজ্ঞ, চিকিৎসা বিজ্ঞানী, ভূ-তত্ত্ববিদ, রসায়ন শাস্ত্রবিদ ও দার্শনিক হিসাবে হাজারো বিশ্ব বিখ্যাত মনীষী ও পীর মাশায়েখ তৈরী করেছে ৷ মাদরাসা শিক্ষাই আধুনিক বিজ্ঞানের সুতিকাগার ৷ মুসলমানগণই ছিল এর স্হপতি ৷           
আজ আধুনিক শিক্ষা ধারার সাথে কুরআন-হাদিসের শিক্ষার সমন্বয় বিধান করে মাদরাসা শিক্ষার জন্য এমন এক পাঠ্যক্রম ও পাঠ্যসূচী তৈরী করা হয়েছে যাতে  শিক্ষার্থীরা ইসলামী জ্ঞানের পাশাপাশি বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিসহ সকল সাধারন শিক্ষা বিষয়েও সমপারদর্শিতা অর্জন করতে পারে । তাই বলা যায়, মাদরাসা শিক্ষা একটি পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা ব্যবস্থা।
প্রকৃতপক্ষে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ লাভের প্রত্যাশায় বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রতিষ্ঠিত এ মাদরাসা শিক্ষার ক্রমধারা পৃথিবীতে কেয়ামত পর্যন্ত বজায় রাখা ও বিস্তার লাভের উদ্দেশ্যে রাজবাড়ী জেলার কালুখালী (তৎকালীন পাংশা) উপজেলার মাঝবাড়ী ইউনিয়নের সুযোগ্য প্রাক্তন চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সমাজসেবক,দানবীর,বহু প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম খোন্দকার গওছল আযম-এর পিতার অছিয়ত পূরণের লক্ষ্যে তাঁর নিজ গ্রামেই পাংশা-বালিয়াকান্দি সড়ক সংলগ্ন মাঝবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদ কার্য্যালয় এবং মাঝবাড়ী ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র এর পার্শ্বে তাঁদেরই দানকৃত জমিতে অত্যন্ত মনোরম পরিবেশে ০১/০১/১৯৮৫খ্রিঃ মাঝবাড়ী সিদ্দিকীয়া আহম্মদিয়া সেরাতুল হক আলিম মাদরাসাটি স্থাপন করেন।
মাদরাসাটি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিশিষ্ট সাহাবী হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) এর বংশধর ‘ফুরফুরা’ শরীফের বড়পীর হযরত আবু বকর সিদ্দিক (রহঃ) এর নামের “সিদ্দিকীয়া” এবং মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতার পিতার নামের সংক্ষিপ্ত অংশ “আহম্মদ” ও তাঁর বংশের অন্যতম ব্যক্তি ‘সেরাতুল হক’ এর নামের সমন্বয়ে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড কতৃক যথাযথ ভাবে “মাঝবাড়ী সিদ্দিকীয়া আহম্মদিয়া সেরাতুল হক আলিম মাদরাসা” হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করে।
মাদরাসাটি মাদরাসা বোর্ড কতৃক ০১৷০১৷১৯৮৬খ্রিঃ দাখিল, ০১৷০৭৷১৯৯১খ্রিঃ আলিম, ০১৷০১৷২০০১ খ্রিঃ দাখিল শাখায় বিজ্ঞান, ০১৷০১৷২০০৩খ্রিঃ দাখিল শাখায় কম্পিউটার বিভাগের স্বীকৃতি লাভ করে নিয়মিত কমিটি গভানিং বডি ও সুদক্ষ শিক্ষক মণ্ডলী দ্বারা অদ্যাবধি সুষ্ঠ ভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে।
বর্তমান যুগোপযোগী শিক্ষার সাথে সমন্বয় করে কোরআন, হাদীস ও আরবী শিক্ষার পাশাপশি বিজ্ঞান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি শিক্ষাসহ সাধারন শিক্ষার সমমানে মাদরাসা শিক্ষা উন্নীত করা হয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় মাঝবাড়ী সিদ্দিকীয়া আহম্মদিয়া সেরাতুল হক আলিম মাদরাসায় তথ্য প্রযুক্তি অধিদপ্তর ও বিভাগ কর্তৃক ২০১৬ খ্রিঃ “শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব ও ক্লাব” স্থাপন করা হয়েছে। যার প্রেক্ষিতে মাদরাসার শিক্ষক-কর্মচারী ,শিক্ষার্থী ও এলাকার আগ্রহী ব্যক্তিবর্গ বর্তমান তথ্য প্রযুক্তি শিক্ষায় অগ্রগামী হচ্ছে। মাদরাসা শিক্ষা-ই এ দেশের সুনাগরিক ও জাতি গঠনে সার্বিক সাফল্য সহযোগিতা প্রদান করছে।